খুলনার রূপসা উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদকের জমি দখলের অভিযোগ

প্রকাশঃ ২০২২-০৩-৩০ - ০০:৩১

ইউনিক প্রতিবেদক :

খুলনার রূপসা উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশার বিরুদ্ধে জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারীর পৈত্রিক সম্পত্তি জবর দখল করে ইটভাটা তৈরির এবং উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের ডোবা গ্রামের জনৈক গোপাল দাসের জায়গা জবর দখলেরও অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে ইটভাটায় অবৈধভাবে জমি দখলে সহযোগিতাকারীদের সমন্বয়ে এবার উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি গঠনের পায়তারা করছেন তিনি। বুধবার (৩০ মার্চ) ঘাটভোগ ইউনিয়ন যুবলীগের সম্মেলনের আয়োজন করা হলেও এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না আহবায়ক মোঃ রউফ শিকদার। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেছেন রূপসার ঘাটভোগ ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মোঃ রউফ শিকদার। উপজেলা চেয়ারম্যানের এসব অনিয়মে সহায়তার অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক এবিএম কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে।

ঘাটভোগ ইউনিয়ন যুবলীগের দেড় যুগ ধরে আহবায়ক মোঃ রউফ শিকদার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর যাবত থানা ও ইউনিয়ন যুবলীগের কোন সম্মেলন হয় না। যখন জেলা যুবলীগের সম্মেলন হবে জানতে পারছি; ঠিক সেই মুহুর্তে তড়িঘড়ি করে একটি মহল সংগঠন পরিপন্থিভাবে হঠাৎ করে তাকে না জানিয়ে, তার নাম ব্যবহার করে ৩০ মার্চ ইউনিয়ন যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।

তিনি বলেন, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক এবিএম কামরুজ্জামান, রূপসা উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও রূপসা উপজেলার চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশার নির্দেশে সম্মেলনের বিষয়ে তার সাথে নুন্যতম কোন আলোচনা ছাড়াই সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার। মুলত এই সম্মেলনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ রূপসা উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলার চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা যাদের দ্বারা তার ইট ভাটায় বিভিন্ন লোকের সম্পত্তি জবর দখল করে ইট ভাটা পরিচালনা করছেন তাদের দিয়েই এই সম্মেলনের কমিটি করতে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছেন। রূপসা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা ইতিপূর্বে রূপসার ডোবা গ্রামের জনৈক গোপাল দাসের জায়গা জবর দখলে নিয়ে ইটভাটার মধ্যে। এমনকি জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত অধিকারীর পৈত্রিক সম্পত্তিও তিনি জবর দখল করে তার ইটভাটার ভিতরে নিয়েছেন। আত্মসম্মান রক্ষার্থে কিছুই বলেন না এ্যাড. সুজিত অধিকারী। তিনি লোকালয়ে, স্কুল, রাস্তার পার্শ্বে এবং আঠারো ঢেঁকি নদীর মাটি যেটা প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা খননকৃত মাটি সেই মাটি নিয়ে তিনি ইট ভাটা পরিচালনা করছে যেটা পরিবেশ এবং আইন বিরোধী। বর্তমানে তিনি তার এই সকল অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে যুবলীগকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য নিজস্ব লোক নিয়ে কমিটি করার জন্য আমাকে না জানিয়ে আগামীকাল ২৯/০৩/২০২২ তারিখ সম্মেলন করতে যাচ্ছে। যেখানে জামাত-বিএনপির লোক কমিটিতে আসতে পারে বলে আমি আশংকা করছি। বর্তমান এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ঘাটভোগ ইউনিয়নে পক্ষে এবং বিপক্ষে দু’টি গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে এবং একটি উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।

পরিশেষে তিনি বলেন, যেহেতু ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক হিসাবে দাওয়াতপত্রে আমাকে সভাপতি উল্লেখ করা হয়েছে- অথচ এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না; বিধায় আগামীকালের সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করছেন তিনি।

রূপসা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়ে বলেন, এসব সুজিত অধিকারী আর ডাবলু পয়সা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়াচ্ছে। আমি কারোরই জমি দখল করে রাখিনি। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে মামলা দিয়েছে। ওরা যদি কিছু পারে তাহলে যেন আমার কিছু করে। আপনারা সাংবাদিকরা এলাকাতে এসে সঠিকভাবে তদন্ত করুন এ বিষয়ে।

জমি দখলের বিষয়ে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী মুঠোফোনে জানান, চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বাদশা আমার পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করে ইটভাটা তৈরি করেছে। ডোবা গ্রামের জনৈক গোপাল দাসের জমি দখল করে রেখেছে চেয়ারম্যান বাদশা। এমনকি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা খননকৃত মাটি সেই মাটি নিয়ে তিনি ইট ভাটা পরিচালনা করছে যেটা পরিবেশ এবং আইন বিরোধী। তার ভাটায় অভিযান চালালে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।