দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার অফিস

প্রকাশঃ ২০২১-০৯-২৬ - ২০:৪৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রত্যয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিলেও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারী-কর্মকর্তারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

বর্তমানে দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার অফিস। জমি রেজিষ্ট্রেশন করাতে অত্র অফিসের একটি কমিশন-বানিজ্য ওপেনসিক্রেট।

জানা যায় চট্টগ্রাম জেলার রেজিস্ট্রার অফিসে ২০২০ সালের আগে এই কমিশনের হার . ৩০ পয়সা থাকলেও বর্তমানে তা বেড়ে . ৪০ পয়সায় উন্নিত হয়েছে। ৪০ পয়সা হারে কমিশন আদায় করলে প্রতি মাসে কমপক্ষে অর্ধ কোটি টাকা অবৈধ আয় হচ্ছে  সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। এমন ধারনা সংশ্লিষ্ট আইনজীবি ও দলিল লেখকদের। আবার জমি মালিকদের দলিল উঠাতেও একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা গুনতে হয় বলে তারা জানান।

এছাড়া নিয়োগ ও বদলি বানিজ্যতো আছেই। অনুসন্ধানে জানাযায়, একেকটি বদলিতে ৫ থেক ৭ লাখ আর নিয়োগে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ নেয় জেলা রেজিস্ট্রার। চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় প্রায় ৩২০ জন কাজী ( মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার)  রয়েছে, এদের নিয়ে জেলা রেজিষ্ট্রেশন অফিসের রয়েছে বিশাল বানিজ্য। নগর ও জেলার ডজনেরও বেশি নিকাহ রেজিস্ট্রার বা কাজীর সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বছরে দুইবার অডিটের নামে পাঁচ হাজার করে দিতে হয় জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে, ইনডেন্ট অর্থ্যাৎ কাজীদের প্রয়োজনীয় সরকারি ফরম ও বিবিধ কাগজ পত্র পাওয়ার আবেদন। ব্যাংক চালানের মাধ্যমে সরকারি ফি জমা দেওয়ার পরও নগদ বীনা রশিদে গুনতে হয় ৫ -৬ হাজার টাকা। হিসাব মতে শুধু কাজীদের হতে বছরে অবৈধ আয় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। এইসব অবৈধ টাকা আদায় করেন প্রধান সহকারী ফিরোজ উদ্দীন ও স্টেনোগ্রাফার মিনহাজ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে কর্মরত এক ব্যাক্তি বলেন, ফিরোজ উদ্দীন ও মিনহাজের হাতে পুরো রেজিষ্ট্রারি অফিস জিম্মি। মিনহাজ অন্যত্র বদলি হয়ে দুই মাসের মধ্যে আবার ফিরে আসে জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে। সব কাজ আগে কন্ট্রাক্ট করবে মিনহাজ তার সাথে দরদাম হলেই সব হবে। সম্প্রতি ফটিকছড়িতে একজন কাজীর মৃত্যুতে তাঁর দায়ীত্ব পাশের আরেক কাজীকে অতিরিক্ত দায়ীত্ব হিসাবে দিয়ে মিনহাজ দুই লক্ষ টাকা নিয়েছে বলে কাজী সমিতির এক নেতা জানিয়েছেন।

এইসব ব্যাপারে জেলা রেজিস্ট্রার তাপস কুমার রায় এর কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি ফোনে কথা বলবেন না বলে ফোন কেটে দেয়।

১৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২.২০ মিনিটে ওনার অফিসে গিয়ে ওনাকে না পাওয়াতে আবারো ফোন করলে তিনি হাটহাজারি বলে আবারও ফোন কেটে দেন। কথা হয় প্রধান সহকারী ফিরোজ উদ্দীনের সাথে তিনি সমস্ত অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান।

স্টেনোগ্রাফার মিনহাজ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাই উকিল আমার বিরুদ্ধে নিউজ করলে আমি মামলা করবো। ভুক্তভোগি ও সচেতন মহল মনে করেন, চট্টগ্রাম জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের দূর্নীতি বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।