ফুলতলায় কলেজছাত্র রোহান হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন হত্যাকারীর প্যানা ঝুলছে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের উপর

প্রকাশঃ ২০২২-০৪-০৩ - ১৮:২৪

তাপস কুমার বিশ্বাস, ফুলতলা (খুলনা)// ফুলতলায় এম এম কলেজ ছাত্র সৈয়দ আলিফ রোহান হত্যার চার দিন অতিবাহিত হলেও এজাহারভুক্ত দীপ্ত সাহা ছাড়া বাকি সবাই রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে রোববার বেলা ১১টায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। অধ্যক্ষ কার্যালয়ের উপরে টানানো খুনের সাথে জড়িত ওই কলেজ ছাত্র হাসিবুল ইসলাম শাস্ত’র ছবি সম্বলিত প্যানা বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ভাংচুর করেছে। এদিকে কলেজের এক জরুরী সভায় খুনের সাথে জড়িত ছাত্রদের বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দিনে দুপুরে ফুলতলা এম এম কলেজ ক্যাম্পাসে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র সৈয়দ আলিফ রোহান দুর্বৃত্তদের ছরিকাঘাতে নির্মমভাবে খুন হয়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা সৈয়দ আবু তাহের টুটুল বাদি হয়ে ৫জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামী করে ফুলতলা থানায় মামলা করেন। পুলিশ ঐ দিনই এজাহার নামীয় আসামী দীপ্ত সাহাকে আটক করে এবং শনিবার সে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। খুনের ঘটনায় ৪দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ ঘটনায় জড়িত আর কোন আসামীকে আটক করতে পারেনি।

রোহান হত্যাকারীদের আটক ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে ফুলতলা এম এম কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে রোববার বেলা ১১টায় খুলনা-যশোর মহাসড়কের এম এম কলেজ গেটের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। কলেজ অধ্যক্ষ শেখ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তৃতা করেন শিক্ষাবিদ আলহাজ¦ আনোয়ারুজ্জামান মোল্যা, ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ মোহাম্মদ ভুইয়া শিপলু, শেখ আবুল বাশার, সহকারী অধ্যাপক ফিরোজা আক্তার, ড. জাকির হোসেন, প্রদ্যুৎ রুদ্র চৈতি, ফুটলাল দত্ত, সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন মোল্যা প্রমুখ। ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধনে বক্তরা অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

এদিকে কলেজ ছাত্র রোহান খুনের ৩দিন পর রোববার দুপুর সোয়া ১২টার কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের উপরে টানানো খুনের সাথে সরাসরি জড়িত কলেজ ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হাসিবুল ইসলাম শান্তর ছবি সম্বলিত প্যানা দেখে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা মিছিল করে অধ্যক্ষ কার্যালয়ে খুনিদের প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ এনে প্রতিবাদ করতে থাকে। এ সময় শান্তর প্যানা ভাংচুর এবং গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান।

দুপুর ১২টায় কলেজ অধ্যক্ষ কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাদিয়া আফরিনের সভাপতিত্বে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অধ্যক্ষ শেখ মোঃ মিজানুর রহমান, কলেজ পরিচালান কমিটির সদস্য শিক্ষাবিদ আলহাজ¦ আনোয়ারুজ্জামান মোল্যা, বিএমএ সালাম, মোঃ সেলিম আহমেদ মহলদার, সহকারী অধ্যাপক ফিরোজা আক্তার, ফুটলাল দত্ত, লুৎফর রহমান, এম এম মোনায়েম হোসেন , ওসি মোঃ ইলিয়াস তালুকদার, প্রেসক্লাব সভাপতি তাপস কুমার বিশ্বাস, উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি শামসুল আলম খোকন, প্রভাষক গাজী ইয়ামিন, সানজিদা শবনম, দিপা গোলাদার প্রমুখ। সভায় ঘটনার দুঃখ প্রকাশ করে খুনের সাথে জড়িত কলেজে অধ্যায়নরত হাসিবুর ইসলাম শান্ত ও হাসনাত শেখকে বহিস্কার, নিহত রোহানের নামে একটা ভবনের নামকরণ, কলেজ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন, বহিরাগতদের অনুপ্রেবেশ রোধ এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদারের প্রস্তাবনা দেয়া হয়।