খুমেক হাসপাতালে নার্সদের দুই গ্রুপের উত্তেজনা চরমে

প্রকাশঃ ২০২১-০৮-২৩ - ২২:৩১

খুলনা অফিস : ঘটনার শুরু ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জুতা পায়ে ফুল দিতে উঠেছিলো নার্সিং সুপারভাইজার রোকেয়া খাতুন। তৎক্ষণাত তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে সরব হয় স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ। প্রথমে পরিচালক এর দপ্তর থেকে কারণ দর্শানো পরে নার্সিং অধিদপ্তর থেকেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয় তাকে। ঘটনাটি ভূলঃবশত সাথে সাথেই আবার জুতা খুলে ফুল দেয়ার দাবি করে রোকেয়া খাতুন ও তার অনুসারীরা পাল্টা স্মারকলিপি দিয়েছে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: অপর্ণা সরকার এর কাছে। একই সাথে এই গ্র“পটি স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও করেন। পাল্টাপাল্টি অবস্থানে হাসপাতালে নার্সদের দুটি গ্র“পের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। এতে হাসপাতালে সেবা কাজে বিশৃঙ্খল তৈরীর পাশাপাশি রোগীদের সেবা কার্জে বিঘœ ঘটার আশংকা করছে সংশ্লিষ্টরা।
নার্সদের পাল্টাপাল্টি গ্রুপিং নিয়ে হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ মোঃ রবিউল হাসান বলেন অতীতে কি হয়েছিলো জানি না। সেদিন একটি ঘটনা ঘটেছিলো একজন নার্স জুতা পায়ে জাতির জনকের বেদীতে উঠেছিলো । তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। নার্সিং অধিদপপ্তরে আলোচনার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতালের সেবা বিঘœ হলে সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেন তিনি। তিনি বলেন কোন অবস্থায় হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের ক্ষতি হয় সেবা বিঘœ হয় এমন কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দেয়া হবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ আগস্ট খুলনা মেডিকেল কলেজ চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয় হাসপাতালের পক্ষ থেকে। হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ রবিউল হাসানের উপস্থিতিতে এসময় চিকিৎসক নার্স ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনেকেই উপস্থিত ছিলো। ঐ সময় আগে পরিচালক উঠে যাওয়ায় নার্সিং সুপারভাইজার রোকেয়া খাতুন জুতা পায়ে বেদীতে উঠে যায়। সাথে সাথে উপস্থিত সবাই তার দৃষ্টি আর্কষণ করলে আবার জুতা খুলে শ্রদ্ধায় অংশ নেন তিনি।
এ ঘটনার পর তার বিরুদ্ধে জাতীর জনকের মুর‌্যালকে অপমান করায় তার বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ এর নেতৃবৃন্দ। হাসপাতাল পরিচালককে স্মারকলিপি দিয়ে ৭ দিনের আল্টিমেটামও দেন তারা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রোকেয়া খাতুনকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে হাসপাতাল ও নার্সিং অধিদপ্তর। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জুতা পায়ে উঠার ইন্দনদাতা হিসাবে আরও দুইজন সিনিয়র স্টাফ নার্স হোসনেয়ারা খাতুন ও সবুরা খাতুন এরও শাস্তি দাবি করে তারা। যদিও এই দুইজনের কেউই জুতা পায়ে ওঠেননি।
এদিকে এই গ্রুপের পক্ষ থেকে গতকাল হাসপাতাল পরিচালককে পাল্টা স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় হাসপাতাল পরিচালকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করে সহকারি পরিচালক অপর্ণ সরকার। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় অভিযুক্ত রোকেয়া খাতুন সেদিন আবেগে ভুল করে জুতা পায়ে উঠলেও সাথে সাথে তিনি জুতা খুলে ফেলেন এবং শ্র্দ্ধার সাথেই ফুল দেয়া কার্যক্রমে অংশ নেন। কিন্তু খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত নন এমন দুইজন নার্স নেতা ও নেত্রীর ইন্দনে হাসপাতালের সাধারণ নার্সদেও নাম ভাঙ্গিয়ে পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্মারকলিপিতে বলা হয় একজন নার্স নেত্রী সম্প্রতি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আবু নাসের হাসপাতালে বদলী হয়েছে। অতীতে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলেও বহাল তবিয়তে থেকে নার্সদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। স্মারকলিপিতে আরও বলা হয় তাদের এই অবতৎপরতায় হাসপাতালের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।