বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জানোয়ারদের প্রভাবের ভারী বর্ষণে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার আমন চাষীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সম্প্রতি অন্যান্যো বছরের তুলনায় এবছর বটিয়াঘাটায় আমন ধানের ব্যাপক ফলন হবার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবছর বটিয়াঘাটায় আমন ধান চাষ হয়েছে ১৭ হাজার, ৫ শত হেক্টর জমিতে এবং উক্ত জমিতে উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তার অধিক উৎপাদন হবে বলে মনে করছেন। বর্তমানে আমন ধানের দু- একটা জাত ছাড়া অধিকাংশ জাতের ধান পেকে গেছে। সম্প্রতি কিছু কিছু জাতের ধান পেকে গেছে এবং কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ এর প্রভাবে প্রবল ভারীবর্ষণে আমন পড়ে গিয়ে পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ধানের অপুষ্টি ও নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যে কারনে উপজেলার কৃষকদের মাঝে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। উল্লেখ্য প্রাচীন ঐতিহ্য খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা আমন ধান থেকে আতপ চাল অর্থাৎ জলমার ভাটেল চাল উৎপাদনের জন্য দেশে এবং দেশের বাইরে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে আসছে। অনেক অভিজ্ঞ মহল জলমার আতপ (ভাটেল) চালককে প্রাচীন ঐতিহ্য ঢাকার মসলিন, জম্মু-কাশ্মীরের শাল চাদরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে প্রভাবে নদী উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের মাঝেও চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। অমাবশ্যার গোনের মাথায় ঘূর্নিঝড় জাওয়াদ সৃষ্টি হওয়ার নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার জলমা-কচুবুনিয়া, শিয়ালীডাঙ্গা, বটিয়াঘাটা বাজার সদর, দ্বীপবরণপাড়া, সুরখালী, বারোআড়িয়া ও সুন্দর মহল নদী উপকূলীয় ভাঙ্গন কবলিত দুর্বল বেড়ীবাঁধ এলাকার মানুষ আরো বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ রবিউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ, প্রতিবেদককে বলেন, আমন ইতিমধ্যে প্রায় সম্পূর্ণ পেকে গেছে এবং ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ কমে গেছে। তাই ক্ষতির সম্ভাবনা কম হবে। আশা করছি দুর্যোগ কমে গেলে আমন চাষীরা সুষ্ঠ ভাবে তাদের ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হবে। এব্যাপারে উপজেলা দুর্যোগ মোকাবিলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মমিনুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ মোকাবেলায় ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি সকল ধরনের প্রস্তূতি গ্রহন করা হয়েছে। আশা করছি কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো।