দাকোপে ঘুর্ণিঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে সহস্রাধীক ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত

প্রকাশঃ ২০১৯-০৪-১১ - ১১:৫৭

আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপ : দাকোপে আকর্ষিক ঘুর্ণিঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে সহস্রাধীক ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি কয়েক শ’ পরিবার খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রাখসিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পক্ষ থেকে অধীক ক্ষতিগ্রস্থ সুতারখালী তিলডাঙ্গা ইউনিয়নে ২ টন চাউল ও নগত ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর হতে দাকোপে শুরু হয় আকর্ষিক ঘুর্ণিঝড় ও শীলাবৃষ্টি। বাতাসের গতিবেগ এত বেশী ছিল যে, উপজেলার সুতারখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার ঘরবাড়ীর চিহ্ন পর্যন্ত খুজে পাওয়া দুস্কর। সরকারী হিসেব অনুযায়ী উপজেলার ৭ টি ইউনিয়ন সুতারখালী, তিলডাঙ্গা, পানখালী, কামারখোলা, বাজুয়া, কৈলাশগঞ্জ ও দাকোপ ইউনিয়নে মোট ৯৮০ টি ঘরবারড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ২৭০ টি সম্পূর্ন এবং ৭১০ টি বাড়ী আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সুতারখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির জানায়, তার ইউনিয়নে ২০০ ঘরবাড়ী সম্পূর্ন এবং ৩০০ আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ। এ ছাড়া আনুমানিক ১০ একর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সুতারখালী মডেল গ্রাম ও কালীবাড়ী এলাকা সব থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখানকার অধিকাংশ মানুষ খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করছে। বর্তমানে তাদেরকে স্থানীয় সাইক্লোন সেল্টারে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান রনজিত কুমার মন্ডল জানায়, সেখানে ২০০ টি ঘরবাড়ী সম্পূর্ন এবং ৩০০ টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ছাড়া মৎস্য ও কৃষি সম্পদ মিলিয়ে আনুমানিক ৪০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় ১০ জন কমবেশী আহত হয়েছে। সেখানকার কামিনীবাসিয়া এলাকা সব থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কামারখোলা ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন মন্ডল জানায়, সেখানে আনুমানিক ৫০ টি ঘরবাড়ী সম্পূর্ন এবং শতাধীক আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখানে আনুমানিক ১৫০ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ছাড়া বানিশান্তায় ২০/২২ টি, পানখালীতে ৭০/৭৫ টি এবং অন্যান্য ইউনিয়ন মিলিয়ে আরো শতাধীক ঘরবাড়ী কমবেশী ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বাজুয়া, কৈলাশগঞ্জ, দাকোপ ইউনিয়নে তরমুজসহ গরমের ধান ও অন্যান্য কৃষি পণ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ আব্দুল কাদেরের সাথে পৃথক ভাবে কথা বলে জানা যায়, তারা ইতিমধ্যে অধিক ক্ষতিগ্রস্থ সুতারখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়নে ১ টন করে চাউল ও নগত ২০ হাজার করে টাকা প্রাথমিক ভাবে বরাদ্দ দিয়েছে। এ ছাড়া জরুরীভাবে খাদ্য, অর্থ ও ৬০০ বান্ডিল টিন সরবরাহের জন্য খুলনা জেলা প্রশাসক বরাবর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।