প্রস্তুত দাকোপ প্রশাসন : অবৈধপথে বিদেশ ফেরত এবং বাজার মনিটরিং বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশঃ ২০২০-০৩-২৪ - ১৫:৪৯

আজগর হোসেন ছাব্বির : করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় খুলনার ঝুকিপূর্ন উপজেলা দাকোপে প্রশাসন সাম্ভব্য সকল প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। শুরু থেকে এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনের সংখ্যা ৮০ জন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় যৌনপল্লী ও হাটবাজার। ৩ টি পৃথক আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করে ১০০ শষ্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অবৈধপথে বিদেশ ফেরতদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত এবং বাজার নিয়ন্ত্রন করা স্থানীয় প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মিদের সমন্বয়ে করোনা মোকাবেলায় গঠিত হয়েছে টাস্কফোর্স কমিটি। দাকোপ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল ওয়াদুদের নেতৃত্বে গঠিত উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি জনসচেতনতায় পোষ্টার লিফলেট বিতরন, বিদেশ ফেরতদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করন, বাজার মনিটরিংসহ অন্যান্য সকল কর্মকান্ড অব্যহত রেখেছেন। এ ছাড়া মংলা বন্দরের বিপরীত পাড়ে অবস্থিত উপজেলার বানীশান্তা যৌনপল্লীটি গতকাল থেকে ২ সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাহী অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে ৩ টি পৃথক আইসোলেশন সেন্টারে ১০০ শষ্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানে প্রয়োজন অনুসারে খাবার সরবরাহের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ডাক্তারদের জন্য পিপিইএর অংশ বিশেষ সরবরাহ করা হয়েছে। সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসায় উপজেলা হাসপাতালে আর টি আই কর্ণার নির্মান শেষ পর্যায়ে। তিনি বলেন যৌনপল্লীর ৬৭ টি পরিবারের কর্মিদের খাদ্য সরবরাহে চাল এবং নগত টাকা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নিত্যুপণ্যের স্বাভাবিক মুল্য বজায় রাখতে বাজার মনিটরিংয়ে একাধীক ব্যক্তিকে জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে নিত্যুপণ্য খাদ্যদ্রব্য এবং জরুরী ঔষুধের দোকান ব্যতিত উপজেলার সকল হাট বাজার চায়ের দোকান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মোজাম্মেল হক নিজামী বলেন, এ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৮০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। যার মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় ১১ জনকে কোয়ারেন্টাইন মুক্ত করা হয়, বাকী ৬৯ জন আছে সার্বক্ষনিক নজরদারীতে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় ৫ টি পিপিই পাওয়া গেছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বর্তমানে পিপিই কিট এবং হ্যান্ডস্যানিটাইজার সংকট সত্বেও চিকিৎসকরা আন্তরিকতার সাথে সেবা দিতে প্রস্তুত আছে। দাকোপ থানার অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম বলেন, বিদেশ ফেরত ৪৪ টি পরিবারে লাল পতাকা টানিয়ে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। তা ছাড়া টাস্কফোর্সের চাহিদা অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন সর্বদা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। চালনা পৌরসভার মেয়র সনত কুমার বিশ্বাস বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করে জনসচেতনতা মূলক কাজ ধারাবাহিকভাবে করা হচ্ছে। তাছাড়া পৌরসভার সকল রাস্তাঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এদিকে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত দাকোপের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ সারা বছর প্রতিবেশী দেশ ভারতে অবৈধ পথে যাতায়াত করে থাকে। যাদের হিসেব প্রশাসনের কাছে থাকার কথা না। উপজেলায় কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৮০ টি পরিবারের মধ্যে ৪৪ টির বিষয়ে তথ্য প্রশাসনের কাছে ছিল। ধারনা করা হচ্ছে বাকীরা অবৈধ পথে যাতায়াতকারী। এদের বিষয়ে তথ্য পেতে প্রশাসনকে জনসচেতনতার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তাছাড়া যোগাযোগে অনুন্নত উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলো নিয়মিত বাজার মনিটরিং করাও প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।