পূর্বাঞ্চল রেলের অনিয়মের কারিগররা ধরাছোঁয়ার বাইরে!

প্রকাশঃ ২০২০-১১-২৬ - ২২:৪৭

মোঃ ইয়াকুব আবেদ,চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ রেলের ঠিকাদারদের সমন্বয়কারি টেন্ডার-ইজারা-নিয়োগ-বাসা বাড়ি বরাদ্দ-বদলি ও ক্যাটারিং এ অনিয়মের সাথে যুক্ত মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকার কারণে সিন্ডিকেট মুক্ত হচ্ছে না রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল।

জানা যায় বর্তমান সরকারের রেলমন্ত্রী নির্দেশে বাংলাদেশ রেলকে সিন্ডিকেট মুক্ত করার জন্য চেষ্টা করেও  বিফলে যাচ্ছে কয়েকজন অসাধু কর্তাবাবুদের  কারণে। ইতিমধ্যে উক্ত কর্তাবাবুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত করছেন দুদক।

রেলওয়ের টেন্ডার, ইজারা, ক্যাটারিং, রাজস্ব আদায় ও নিয়োগ বাণিজ্যের মূল হোতারা কর্মকর্তাদের সাথে লিয়াজো করে অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া কর্তাবাবুদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমানে রেল সদরদপ্তরের “মমিনুল ইসলাম মামুন”, বর্তমানে রাজশাহীতে বদলির আদেশ প্রাপ্ত “জিয়াউর রহমান মামুন”, রেলওয়ে বাণিজ্যিক বিভাগের প্রধান সহকারী “মামুন মিয়া” ও উচ্চমান সহকারীর “রেজা হায়দার”।

ইতিপূর্বে পূর্বাঞ্চল রেলের বাণিজ্যিক শাখায় অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে যুক্ত কর্মচারী অলিউল্লাহ সুমন দুদকের মামলায় জেলে গেলেও বাকিরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

রেল সূত্রে জানা যায় অভিযুক্ত কর্মচারীরা দুদকের তদন্ত হতে রেহাই পাওয়ার জন্য দুদক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

রেল সূত্রে আরো জানা যায় দুদকের মামলায় পূর্বাঞ্চল রেলের বাণিজ্যিক শাখার অলিউল্লাহ সুমন গ্রেপ্তার হলেও বর্তমানে জামিনে এসে পুনরায় চাকরিতে যোগদানের জন্য পূর্বাঞ্চল রেলের জিএমকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

জানা যায় রেল মন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ রেলকে সিন্ডিকেট মুক্ত করার জন্য কয়েকজন কর্মচারীকে বদলির আদেশ দিলেও উক্ত বদলির আদেশকে উপেক্ষা করে এখনো চাকরিতে যোগদান না করে পুনরায় পূর্বাঞ্চল রেলের যোগদান করার জন্য পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তদবির চালাচ্ছেন জিয়াউর রহমান মামুন।

 জানা যায় বাংলাদেশ রেলের রাজস্ব দ্রুত আদায়ের জন্য মন্ত্রীর নির্দেশে পরিপত্র জারি করা হলেও বাণিজ্যিক বিভাগে কর্মরত প্রধান সহকারী মামুন মিয়া ও উচ্চমান সহকারী রেজা হায়দারের পরামর্শদাতা জিয়াউর রহমান মামুনের কারণে ত্বরান্বিত হচ্ছে না রাজস্ব আদায়।

আরো পড়ুন:

পূর্বাঞ্চল রেলের জিয়াউর রহমান মামুনের বদলি ঠেকাতে মরিয়া হাওয়া ভবন সদস্যরা

পূর্বাঞ্চল রেলের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে জানান অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে জিয়াউর রহমান মামুনকে বদলি করা হলেও তিনি রাজশাহী যোগদান না করে ছুটিতে রয়েছেন। তিনি আরো জানান রেল সদরদপ্তরের একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা শীঘ্রই অবসরে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন জিয়াউর রহমান মামুন। উক্ত কর্মকর্তা অবসরে যাওয়ার পর নতুন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে জিয়াউর রহমান মামুন পুনরায় পূর্বাঞ্চল রেলের যোগদানের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি আরো জানান জিয়াউর রহমান মামুন দীর্ঘদিন পূর্বাঞ্চল রেলের থাকার সুবাদে মাফিয়া ঠিকাদাররা তাকে সিন্ডিকেটে যুক্ত করেছেন। ঐ ঠিকাদারদের বেআইনি সকল কর্মকাণ্ডে অবৈধ লেনদেনের সুবিধা ভোগ করেন জিয়াউর রহমান মামুন। এই কারণেই তিনি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ছাড়তে রাজি নয়।

রেলওয়ে শ্রমিক লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে জানান অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি দপ্তরকে জিম্মি করে রেখেছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে তাদের মাধ্যমে সকল অপকর্ম চলতেছে দীর্ঘদিন যাবত। তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ দুদক কর্তৃক তদন্ত করা হলেও দুদক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রতি বারই তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকেকে যাচ্ছেন এই অপকর্মের কারিগররা।

এ বিষয়ে পূর্বাঞ্চল রেলের চিফ কমার্শিয়াল কর্মকর্তার নাজমুল সাহেবের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।